স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের লবনচরা থানার ডেসটিনির মাঠে গত ২২ নভেম্বর অজ্ঞাত হত্যাকারীদের হাতে নিহত গৃহবধূ নুরনাহার হত্যা মামলার মূল আসামীদের গ্রেফতার করেছে খুলনা সিআইডি।
সিআইডি খুলনার পুলিশ পরিদর্শক মোছাঃ মাহমুদা খাতুন গত ২৮ ডিসেম্বর সন্দেহভাজন আসামী কেএমপির হরিণটানা থানাধীন হোগলাডাঙ্গা আসাদের মোড়ের বাসিন্দা ফারুক ওরফে জামানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত জামাল হাওলাদার হত্যার ঘটনা বর্ণণা করেন। হত্যাকান্ডে তার সহযোগী ফারুক মহাজনকে গত ২৯ ডিসেম্বর খুলনার ৫ নম্বর ঘাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক মহাজন হত্যাকান্ডে নিজেকে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে উক্ত জামাল ও ফারুকের দেখানো মতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রশি, হত্যাকান্ডের কাজে ব্যবহার করা বাইসাইকেল উদ্ধার করা হয়। গতকাল বুধবার আসামী ফারুক মহাজন ও জামাল হাওলাদার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেছেন।
সিআইডি তদন্তকালে জানতে পারে, আসামী জামাল হাওলাদার ও ভিকটিম নুরনাহার পূর্ব পরিচিত। আসামী জামাল হাওলাদারের কাছ থেকে ভিকটিম নুরনাহার বিভিন্ন সময়ে টাকা পয়সা নিলেও জামালের সাথে ভাল ব্যবহার করতেন না। একাধিকবার জামালকে হয়রানী করেন। এ কারণে ক্ষুদ্ধ হয়ে জামাল তার গ্রাম সম্পর্কের দুলাভাই ফারুক মহাজনকে সাথে নিয়ে নুরনাহারকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ফারুক মহাজন ৫ নং ঘাট এলাকায় সিমেন্ট এর বস্তা থেকে ব্যাগ বানানোর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ফারুককে ৫ হাজার টাকা দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়ে জামাল তাকে সহযোগী হিসেবে রাজি করান। সেই মোতাবেক গত ২২ নভেম্বর জামাল বাইসাইকেল চালিয়ে ফারুকের ৫ নম্বর ঘাটের বাড়িতে গিয়ে সিমেন্টের ব্যাগের মুখ সেলাই করার কাজে ব্যবহার করা সূতা সংগ্রহ করেন। তারপর ফারুককে সাইকেলে উঠিয়ে নিয়ে জামাল সোনাডাঙ্গায় গিয়ে সাইকেলটি একটি গ্যারেজে রেখে দু’জনে মিলে অটোরিক্সায় গল্লামারি মোড়ে যান। সেখানে গিয়ে নিহত ভিকটিম নুরনাহারকে ফোন দিয়ে ডেকে নিয়ে তিনজনে মিলে অটোরিক্সায় করে ছাচিবুনিয়া মোড়ে যান। সেখানে গিয়ে আসামী জামাল টাকা দিয়ে ফারুককে দু’টি জুস ও আপেল কিনে আনতে বলেন। ফারুক জুস ও আপেল কিনে আনেন। পরে তিনজনে মিলে হাটতে হাটতে ডেসটিনির মাঠ বলে পরিচিত নির্জন এলাকায় নিয়ে জুস ও আপেল খান। জুসের মধ্যে আসামী জামাল ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে দেয়ায় নুরনাহার কিছুক্ষন পর অচেতন হয়ে পড়েন। তখন আসামী জামাল সাথে থাকা সুতা দিয়ে গলায় ফাঁস দেন। আসামী ফারুক নুরনাহারের পা চেপে ধরে রাখেন। এভাবে মৃত্যু নিশ্চিত করে দু’জন পায়ে হেটে রাস্তায় গিয়ে অটোরিকশা যোগে শিববাড়ি মোড় এলাকায় যান। তখন জামাল তাকে চার হাজার ৭শ’ টাকা ফারুককে দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার জন্য বলেন বলেও জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন।