# ক্রেতার চাহিদা কম
এম.পলাশ শরীফ, মোরেলগঞ্জ : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পবিত্র ঈদ উল আজহাকে সামনে রেখে কামার পাড়ায় নেই সেই টুং টাং শব্দ। এবারে ক্রেতার চাহিদা কম থাকায় দুশ্চিন্তায় কামার পেশাদাররা। চাপাতি, স্যানা দা, ছুরি নতুন তৈরি করার চেয়ে পুরাতন মেরামতের ভীড়।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, মোরেলগঞ্জ পৌর শহরের কামার পট্ট্রি এলাকার ঐতিয্য এক সময়ের টুং টাং শব্দে মুখরিত ছিলো এ পাড়ায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত। আজ কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোয়ায় বদলে গেছে। দিন দিন চাহিদা কমে যাওয়ায় এ পেশার মানুষ তাদের পেশা বদালাচ্ছেন। স্বাধীনতার পরবর্তী এ পট্ট্রিতে দু’পাড়ে ২৫ থেকে ৩০ টি দোকান ছিলো। আজ সেখানে মাত্র ৮টি দোকান। কামার পেশায় নিয়োজিত ৩০/৪০ বছরের কারিগরেরা পড়েছেন দুশ্চিনায়। ঈদ কুরবানী আসলে প্রতিটি দোকানে উৎসবের ১৫ দিন পূর্ব থেকেই বেচা-বিক্রির ধুম পড়ে যেতো। এ বছর দোকানগুলোতে তেমন বেচাবিক্রি হচ্ছে না। ঈদ-উল আজহার বাকি মাত্র ৫দিন। প্রতিটি দোকানে সারাদিনে ২/৪ জন ক্রেতার দেখা মিললেও সময়ের চাহিদা অনুযায়ী দা, চাপাতি, ছুরি নতুন তৈরি করছে না ক্রেতারা, টুং টাং শব্দ নেই দোকানগুলোতে। রেলপার্টির লোহা ১২৫ টাকা কেজি এবং স্প্রিং লোহা কেজি ১০০ টাকা। একটা নতুন দা তৈরি করতে খরচ হচ্ছে ৪শ’ ৫০ থেকে ৫শ’ টাকা এবং গরু জবাইয়ের ছুড়ি ৮শ’ থেকে ১২ শ’ টাকা, চাপাতি ১ হাজার থেকে ১৫শ’ টাকা। তবে, বেশীরভাগই পুরাতন মালামাল নিয়ে গৃহস্তরা পাইন দিতে আসছেন কামারদের কাছে।
কথা হয় এ পেশায় নিয়োজিত কারিগর স্বপন কর্মকার, বিধান চন্দ্র বালা, উত্তম কর্মকর্তার, সঞ্চয় কর্মকার, বুলু কর্মকার নারায়ন কর্মর্কার বলেন, বাপ দাদার পেশা বদলাতেও পারছি না। এখানে যারা কারিগর রয়েছেন দু’একজন নতুন হলেও বেশীরভাগই ব্যবসায়ী ৩০/৪০ বছরের পুরাতন। কয়েক যুগ ধরে এ পেশার সাথে কাজ করছেন। ঈদের বাকি মাত্র কয়দিন এ বছর ক্রেতাদের চাহিদা নেই বললেই চলে। অগ্রীম বিক্রির জন্য অনেক টাকার মালামাল এনে দোকানে রাখা হয়েছে, এ মৌসুমে তা বিক্রি করে টাকা তোলা যাবে না। তার পরেও প্রতিটি দোকানে একজন করে শ্রমিকের বেতন দিতে হয় মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। অগ্রীম ৪০/৫০ হাজার টাকা দিয়ে আনতে হয় শ্রমিকদের। গত বছর কয়লার বস্তা ছিলো ৮শ’ টাকা এবছর তা কিনতে হচ্ছে ১৬শ’ টাকায়, বিদ্যুৎ বিলও দ্বিগুন। কিভাবে ব্যবসা করে পরিবার পরিজন নিয়ে চলবো।এ পেশা ধরে রাখতে হলে সরকারি পৃষ্টপোষকতায় বিনা সুদে লোন দেওয়ার দাবি জানান।